কিশোঞ্জালুক

“এমুন দিন ত দেকছি না, ঠিশি (ঠাট্টা) মজাক কইরা বাঙ্গায়া দেওন লাগে ঠিশি হোরছি! অহন সবেরওই খালি চ্যাত আর চ্যাত, কতা কেওই মাডিত ফোড়তো দে’ না। মজাক কোরছো আর ব্যাডা বুইজ্জে না? তে মনো হরো তুমার কাম শেষ! জাগাত ফাড়া দে’ গাইরালাইবো! এল্লাইজ্ঞা অহন আমি ফারতে কেওইর লগে মজাক করিনা, করলেও বাদে কইয়া দেই, এইদে বাই, আমি কৈল তর লগে মজাক কোরছি। কিস্তা মনো হরিছ না।”
ভাই থামলেন। আমি ভাই এর দিকে তাকিয়ে আছি, কিছু বলার ভাষা পাচ্ছি না।
পৃথিবী থেকে করোনা এখনো যায়নি। প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন মানুষ মারা যাচ্ছে। তবে জীবন থেমে নেই, জীবিকার তাগিদে মানুষকে বের হতে হচ্ছে, লক ডাউনে পড়ে থাকা যাচ্ছে না আর। মানুষ বেড়াতে যেতেও শুরু করেছে এখন।  আমি এসেছি ভাইয়ের কাছে। কুশল বিনিময়ের পরে ভাইয়ের কাছে মজার কিছু শুনতে চাইতে ভাই হালকা চালে উপরের এই কথা শোনালেন। আমি বললাম, মানুষের এমন পরিবর্তনের কারণ কী বলে মনে করেন? ভাই বললেন, কারোন ত কত্তাওই আছে, তে সবতে বড় কারোন অইলো কোরূনা। এই কোরুনা আয়া মাইনষের মিজাজ মর্জি বদলায়া লাইছে। মাইনষে অহন কালি ঝিমা’ বোয়া বোয়া, হুইত্তা হুইত্তা। আর যুইত মতো কতা না কইলেওই ক্যাক কোইরা দইরালা। মাইনষের দুষ দেওন যা’না। কত আর মানবো! কী কোরুনা যে আইলো! লড়ে ও না, মরে ও না।
ভাইকে কি আমি সান্ত্বনা দেব? কী সান্ত্বনা দেব? কেনইবা দেব? ভাই তো মানুষের পরিবর্তনটা পর্যবেক্ষণ করেছেন মাত্র, নিজে তো হতাশ হননি। সে কথা জানিয়েছেনও তিনি। আমি প্রসঙ্গ পাল্টাতে চেয়ে বললাম, ভাই, করোনা পরবর্তী জীবন তো আমাদের অনেক সহিষ্ণু হবে, তাই না?
-কেমনে কই কও! আমি ত দেহি মাইনষে আরও বেশি নাডামি শুরু হোরছে।
-কী রকম ভাই?
-মনো হরো অহন মাইনষে মাস্ক পিন্দনডারে গেরাইম্মা কাম বাবদাছে। মাস্ক না পিন্দনডা অহন বেডাগিরি। ইড্ডা কিছতা হইছে? রুগ জীবাণুর লগে তামশা কোরলে অইবো? আরে ব্যাডা, তর জানের ডর না তাকলে নাই, আরেকজনের ত আছে! হের জানের উফরে কেরে তুইন ফাড়া দেছ?
-তা ঠিক ভাই। মানুষ এখন হতাশ। জীবন জীবিকা অনেকের অনিশ্চিত। কী করবে মানুষ!
-কেরে, ডেরাইবারি কোরবো! মাইনষে ত অহন কালি ডেরাওবার অইতো চা’। শিক্কিতো লুকও ইতা কওয়াকওয়ি কোরতাছে।
-হুম, এটা অবশ্য নতুন একটা ফান। আরো অনেকেই আছে যদিও, তবে ড্রাইভার হিট।
-অইতো না কেরে, স্বাইস্থ্য গতরের ডেরাইবার যে! বাইচ্চাও তাকবো, বালাও তাকবো।
-হুম, এটা ঠিক। আচ্ছা ভাই, এদের একটা কমন জিনিস লক্ষ করেছেন? এরা খামার দেয়।
-দিতো না! স্বাইস্থ্য গতর টিক রাহনের লাইজ্ঞা খাডি দুদ ফাইবো কই! সবকানো ত বেজাল! আর হুইঞ্চি খামার খুমার কোরলে ট্যাক্সও কম দেওন লাগে। অল্ফ ট্যাহা সরহাররে দে’ সব কামাই অয়াইট কইরা লওন!
-ভাই কী মজাক করলেন?
-মজাকওইত্ত! ফুরাডাওই মজাক। ফুরাডাওই ঠিশি।