সৃজনশীল গ্রেডিং

আই এম এ মেন অব ভাই বেরাদার। মানে, আমি ভাই বেরাদার খুঁজি। জ্বি, এটাই সায়েন্স, আই মিন, বঙ্গানুবাদ। ভাই বেরাদারদের উপর আমি অধিকার খাটাই। আর কারো উপর খাটাইনা, খাটাতে চাইও না।
আজকে আমার ভাই Akther Hossan এর জন্মদিন। এ উপলক্ষে আমি একটা গল্প বলবো। আজকে যে গল্পটা ফেঁদেছি, সেটার সূত্র আমার আরেক ভাই Samsuzzaman Riton দিয়েছিল গত সপ্তাহে। সে আইবিএ থেকে এমবিএ করেছে। আইবিএ তে নাকি গ্রেড পয়েন্ট বলার একটা স্টাইল আছে। কেউ কাউকে কত গ্রেড পেয়েছে জিজ্ঞেস করলে নাকি বলে, ‘ফোর’, বলে থামে, এরপর বলে, ‘টু পয়েন্ট ফোর।’
গ্রেড বলার এই স্টাইল নিয়ে মাথায় এই গল্প এলো।

১.হার ম্যাজেস্টিস সিক্রেট সার্ভিস প্রধান এম জানলেন বাংলাদেশের সৃজনশীল শিক্ষাদান পদ্ধতি সম্পর্কে। তিনি খুব উচ্ছ্বসিত হলেন এই ধরনের নিরীক্ষামূলক পাঠদানের খবর পেয়ে। তিনি ভাবলেন, এ ধরনের শিক্ষাদান পদ্ধতি তার এজেন্টদের জন্য কাজে আসতে পারে। যেই ভাবা, সেই কাজ। সাথেসাথেই তিনি ইন্টারকমে ডেকে পাঠালেন তার সেরা এজেন্টকে। সে রুমে ঢুকতেই বললেন, “ডাবল ও সেভন, বাংলাদেশ সম্পর্কে তোমার ধারণা কী?” ডাবল ও সেভন প্রশ্ন শুনে তিন সেকেন্ডের জন্য দ্বিধান্বিত হলো; ভাবলো, বাংলাদেশ!  বাংলাদেশ কেন! নিশ্চয়ই পেঁয়াজ কান্ড! হায়রে পেঁয়াজ! শেষ পর্যন্ত তুই এখানে! শেষ, ডাবল ও তকমা শেষ! এই তকমা বাদ দেবার সময় এসেই  গেল তবে, জন ডৌ! মুখে বললো, “বাংলাদেশ অনেকগুলো সূচকে বেশ ভালো করছে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে….”
এম হাত তুললেন। ‘থামো। বাংলাদেশ থেকে নেবার কী আছে বলো।”
ডাবল ও সেভন আবারও দ্বিধান্বিত হলো, এক সেকেন্ড ভেবে নিল। বাংলাদেশ থেকে তো যা নেবার, দুইশ বছর ধরে নেয়া হয়েছেই! আবার কী! মুখে বললো, “অর্থনৈতিক উন্নতির রূপরেখা, বিপুল জনগোষ্ঠী থাকা সত্ত্বেও মানব সূচকে উন্নয়ন…. “
এম হাত তুললেন। “থামো। এসব শোনার জন্য তোমাকে ডেকেছি বলে তোমার মনে হয়? বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে কথা বলো।”
ডাবল ও সেভন আবারও দ্বিধান্বিত হলো, এক সেকেন্ড ভেবে নিল। বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে কথা বলার কী আছে! শালা কার মুখ দেখে আজ ঘুম ভেঙ্গেছিল!
ডাবল ও সেভন কে চুপ থাকতে দেখে এম নিজেই মুখ খুললেন। “শোনো, ওরা সৃজনশীল পদ্ধতির শিক্ষাদান আবিষ্কার করেছে, যেখানে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের অন্তর্গত কোন একটা বিষয়ে একটা সূত্র দেয়া হয়, এরপর সেই সূত্রের সাথে মিলিয়ে তাদের নিজেদের বুদ্ধি খাটিয়ে তারা নানা প্রশ্নের উত্তর দেয়। বিষয়টার গভীরতা তুমি বুঝতে পারছো?”
ডাবল ও সেভন মাথা ঝাঁকালো। বুঝতে পেরেছে। এতটুকু না বুঝলে আর ডাবল ও তকমা কেন! এম বললেন, “এই শিক্ষাদান পদ্ধতি আমাদের জানা প্রয়োজন। একটা সূত্র থেকে বিশ্লেষণের মাধ্যমে একটি সিদ্ধান্তে উপনীত হবার শিক্ষা প্রতিটি গুপ্তচরের জানা দরকার। তোমার নেক্সট মিশন হলো, বাংলাদেশে গিয়ে সৃজনশীল পদ্ধতির শিক্ষা হাতে কলমে গ্রহণ করবে। শিখে এসে অন্য এজেন্টদের শেখাবে। একজন অকালে ঝরে যাওয়া ছাত্র হিসেবে তোমাকে নৈশ বিদ্যালয়ে ভর্তির ব্যবস্থা করা আছে। যাও, মানিপেনির কাছ থেকে ব্রোশুরে বুঝে নাও।”
ডাবল ও সেভন এর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লেও সে এতটা যন্ত্রণা পেত না। ব্লোফেল্ড কে মনেমনে কষে গালি দিল। বাংলাদেশে গিয়ে সে করবে কী! ক্যাসিনো লোপাট, পেঁয়াজের দাম প্লুটোচুম্বী! নীরবে রুম থেকে বেরিয়ে যাবার জন্য ঘুরতেই এম পেছন থেকে বললেন, “লিসেন, আই ওয়ান্ট গ্রেট গ্রেড।” কথাটা এম ইংরেজিতেই বললেন।

২.দিনপঞ্জি মতে একবছর, আর তার মতে একটা জীবন পার করে ডাবল ও সেভন সৃজনশীল পদ্ধতির শিক্ষা নিয়ে ফিরে এলো। এম এর কাছে গেল রিপোর্ট করতে৷ এম তাকে প্রথম প্রশ্নই করলেন গ্রেড নিয়ে, “ওওট গ্রেড হ্যাভ য়ু এচিভবড?” এক জীবন পর নিজেকে ফিরে পাওয়া ডাবল ও সেভন আনন্দের আতিশয্যে তার স্বভাবসুলভ রীতিতে, যেভাবে সে তার নামটা বলে, বললো, “ফো’…. টু পয়েন্ট ফো’ “