-দোস্ত, একটা হোন্ডা কিনে ফেলবো। সামনের মাসে বেতন পেলেই একটা হোন্ডা কিনে ফেলবো।
-বেতন দিয়ে হোন্ডা কিনবি, সারা মাস চলবি কেমনে?খাবি কী?
-সারা বেতন দিয়ে তো না! সারা বেতন দিয়ে এমনিতেও হবে না- তুই জানিস। হোন্ডা কেনার জন্য টাকা জমিয়েছি একটু একটু করে। আর হাজার দশেক হলেই হবে। সেটা সামনের মাসের বেতন থেকে নিয়ে কিনে ফেলবো। এরপর সারা শহর ঘুরবো। দিন-রাত ঘুরবো।
-কোথায় ঘুরবি এত?
-যেখানে ইচ্ছা হবে। শহরের প্রতিটা কোণায় যাব; প্রতিটা অলি-গলিতে যাবো, যতদূর যাওয়া যায়, যাবো।
-সারাদিন ঘুরবি? তোর চাকরি করবে কে?
-ঘোরাটাই আমার কাজ হবে।
-বেতন দেবে কে? খাবি কী?
-দোস্ত, আমি দেখেছি, খাওয়ার কষ্ট আমাদের হয় না। কোন না কোনভাবে খাবার জুটেই যায়।
-খাবার জুটলো, বুঝলাম, চলাফেরার টাকা কে দেবে তোকে? পেট্রোলের পয়সা?
-উপায় হয়েই যাবে।
-হাহাহা। ভালো ভালো। হোন্ডা চালা। শহর দ্যাখ। আনন্দই আনন্দ!
-হাহাহা।
-চল, লাঞ্চ ব্রেক শেষ হয়ে গেছে।
-চল।
টং দোকান থেকে বেরিয়ে আমরা অফিসের দিকে পা বাড়াচ্ছি, আমাদের হাতে সিগারেট শেষ হয়ে এসেছে। পাশ দিয়ে একটা রিকশা গেল, রিকশায় মাইক লাগানো, মাইকে ঘোষণা আসছে, একটি নিখোঁজ সংবাদ…একটি নিখোঁজ সংবাদ… একজন যুবক হারায়া গিয়াছে…একজন যুবক হারায়া গিয়াছে…যুবকের বয়স পঁয়ত্রিশ বছর… যুবকের বয়স পঁয়ত্রিশ বছর….
আমরা দু’জন, দুই সহকর্মী, একে অপরের দিকে তাকিয়ে হাহা করে হেসে উঠলাম।