(কোটা বিষয়ে আমার দ্বিতীয় প্রস্তাবনা)
কোটা পছন্দ করেন কি না, ভালোবাসেন কি না – এটা জানতে চেয়েছিলাম বিভিন্ন শ্রেণী – পেশার মানুষজনের কাছে। উত্তর যা পেলাম, তাতে বুঝলাম কোটা অমর; কোটার কন বিনাশ নাই। কোটা বেশিরভাগ মানুষের অন্তরে আছে। কিছু নমুনা দিচ্ছি, দেখুন।
১)একজন প্রত্নতত্ত্ববিদদের সাথে কথা হলো এ বিষয়ে। তিনি জানালেন তিনি কোটার খুব কদর করেন। তার সাথে সেই কথোপকথনের চৌম্বক অংশ এখানে দেয়া হলো
– কোটা পছন্দ করেন?
– অবশ্যই পছন্দ করি। কোটা আমাদের ঐতিহ্য’র অংশ।
– (অবিশ্বাস ভরা কন্ঠে) তাই নাকি! তা কিভাবে?
– দেখুন, আমাদের প্রাচীন নিদর্শনগুলোতে কোটা একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। কোটা, বিশেষ করে আমাদের টেরাকোটা বিশ্ব ঐতিহ্যেরই একটা দারুণ গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন।
-(ঠাডা খেয়েছি যেন) ও আচ্ছা…
২) একজন ফ্যাশন সচেতন নারীর সাথে কথা হলো এ বিষয়ে। তিনি জানালেন তিনি কোটা বেশ পছন্দ করেন।
তার সাথে সেই কথোপকথনের চৌম্বক অংশ –
– কোটা পছন্দ করেন?
– হুম, অবশ্যই। এটা একটা বৈচিত্র্যময় ব্যাপার। তবে, সবসময় ভালো লাগে না। বিশেষ বিশেষ পার্বণে ভাল লাগে।
-কেমন সেটা?
– এই ধরুন, আমাদের দেশীয় যেসব উৎসব পার্বণ আছে, সেসব পালনের সময় আমি কোটা পড়ি। আমার ব্ল্যাক এন্ড হোওয়াইট কোটা সবচে’ বেশি ভালো লাগে। অন্যদেরকেও আমি ব্ল্যাক এন্ড হোওয়াইট সাজেস্ট করি।
৩)একজন বেকার যুবকের সাথে কথা হলো এ বিষয়ে। তিনি জানালেন কোটা এখন তার বেকার সময়ের অনেকটা অংশ জুড়েই আছে। তার সাথে সেই কথোপকথনের চৌম্বক অংশ –
-কোটা বিষয়ে আপনার মতামত কি?
-ভাই কোটা আমার আশ্রয় এখন। কোটার ভিত্রে যতক্ষণ থাকি, ততক্ষণ ভালো থাকি, কেউ ডিস্টাব করার সুযোগ পায়না।
– কি রকম বলেন তো?
-বাইরে বের হইলে আনেকের সাথে দেখা হয়, চাকরি বাকরি নিয়া কথা শোনায়, এই জন্য নিজের কোটায় বইসা থাকি, ভালো লাগে।
৪)একজন গাড়ি চালকের সাথে কথা হলো এ বিষয়ে। তিনি জানালেন ‘বেরেক টাইমে’ তার প্রিয় জিনিস হলো কোটা। তার সাথে সেই কথোপকথনের চৌম্বক অংশ –
-কোটা নিয়ে কিছু জানেন?
-কুডা খেলা? অনেক জানি।
-(কোটা কে একটা খেলা বলেছে একজন ড্রাইভার! আমি তাকে দার্শনিক জ্ঞানে আহ্লাদিত হয়ে) কোটা কে আপনি খেলা বলছেন!
-হ, কুডা অনেক মজার খেলা। বেরেক টাইমে আমি কুডা খেলি। আমার সাথে কেউ পারেনা।
-কি রকম?
-এই ধরেন, চাইর গুডির কুডা, ষুল্ল গুডির কুডা… আপ্নে আমার লগে চ্যালেঞ্জে খেলবাইন?
৫)ক্লাশ টু’তে পড়া এক বাচ্চা মেয়ের সাথে কথা হলো। সে জানালো কোটা সে পছন্দ করে। তার সাথে সেই কথোপকথনের চৌম্বক অংশ –
-কোটা কি বলোতো বেটা।
– কুতকুত খেলার ঘর।
৬)কোটা বিষয়ে আমাদের কিশোওঞ্জা লুক-
-কোটা জিনিসটা বুঝেন?
-বুজদাম না কেরে! কুডা আরহি!
-কুডা? কি বলেন!
– তে? কুডা অইত্তো! আফনে শহইরা বাষাত কইতাছুইন কুটা, আমরা ইডডারে কই কুডা।
-আচ্ছা বুঝলাম। এখন বলেন, কোটার দরকার আছে কিনা।
-অবশ্যই দরহার আছে। আতের লাগালের বাইরে উফ্রেত্তে কিছতা পাড়তো অইলেইত্তো কুডা ডা কামো লাগে। দরুইন উচা গাছেত্তে আম ফারবাইন, লাগাল ফাইতাছুইন না, তহন যুদি আপ্নেত্তে কুডা থাহে, চোক্কের পলহে আম পাইড়ালতারবাইন….
অন্য আরো যাদের সাথে কথা হয়েছে, সেসব আর দিচ্ছি না। কোটা যে এত দরকারি, সেটা এখন আমি বুঝে গেছি। সবচে ভাল বুঝিয়েছেন আমাদের কিশোওজ্ঞা ভাই। “আতের লাগালের বাইরে উফ্রেত্তে কিছতা পাড়তো অইলেইত্তো…”