খাটাশ

শহরের লোক এর আগে কখনো খাটাশ দেখেনি; তারা কেবল বইতেই পড়েছিল খাটাশের কথা; পড়েছিল খাটাশ নাকি নোংরা, ইতর প্রানী। শহরের লোক কল্পনায় ভেবে ভেবে আকুল হয়; আর সময় চলে তার নিজস্ব নিয়মে।
এরপর শহরে এলো সেই মানবিক লোকটি, খাটাশ সাথে নিয়ে। শহরের প্রতিটি প্রান্তে, প্রতিটি মানুষ দেখবে বলে খাটাশটিকে তিনি শহরের প্রতিটি কোণে নিয়ে গেলেন। শহরময় মানুষ এলো খাটাশ দেখতে। মানুষ দেখলো;  মানুষের দেখার, জানার তৃষ্ণা মিটলো। মানুষ আবিষ্কার করলো খাটাশের মাঝে অনেক প্রাণীর বৈশিষ্ট্য রয়েছে। খাটাশকে দিন ও রাতের ভিন্ন ভিন্ন সময় ভিন্ন ভিন্ন রঙে, ভিন্ন ভিন্ন বর্ণে, আর ভিন্ন ভিন্ন আকৃতিতে দেখা যায়। খাটাশের আছে সাপের মত সম্মোহনী ক্ষমতা, সে ক্ষমতা দিয়ে সে মানুষ আটকে ফেলে। মানুষ টের পায় ওর গা থেকে ভোঁদড়ের মত গন্ধ আসে। তবু মানুষ নড়তে পারে না; তবুও মানুষ খাটাশটাকে ভালোবেসে ফেলে, অজান্তে, অলক্ষ্যে। ভালোবেসে মানুষ খাটাশকে নিজেদের মাঝে জায়গা করে দেয়। সময় চলল তার নিজস্ব পথে।
শহরে মাত্র একটা খাটাশ; কেমন করে হবে! মানুষ ব্যাকুল হয়। ব্যাকুল হওয়াও মানুষের ধর্ম। খাটাশ বাঁচাতে মানুষ তার নিজস্ব অভিযোজন ক্ষমতার প্রয়োগ ঘটায়।