ছুডুবেলা হাপপ্যান্টের ভিত্রে ঠান্ডা লাগতো। ছুডুবেলা বললাম, কারণ আমার ছুডুবেলা, ছুডুবেলাই, ছোটবেলা না; আর হাপপ্যান্টের ভিত্রে বললাম, তবে ভিত্রে ঠিক কুন জায়গায়, সেইটা বললাম না। সব জিনিস বলা ঠিক না।
আমার বেশির ভাগ হাপপ্যান্টের চেইন থাকতো না। ছোট কাজ করতে গেলে হাপপ্যান্ট নামায়া, নাইলে উরুর একসাইড দিয়া কাম সারতে হইত। চেইনওলা হাপপ্যান্টের চেইন থাকতো না। ঠান্ডা লাগতো ঐখানেই। শালা কইয়াই দিলাম! হাহাহা। এখন অবশ্য কইতে ভালোই লাগে। মাইনষে নুটিশ করে আমার কথা। মাইনষের নুটিশ পাওয়ার ব্যবস্থা আমি করছি।
ছুডুবেলা আমরা ঢাকা আসছি। গাঙে বাড়ি নিয়া যাওয়ার পরে। আব্বা রিস্কা চালাইতো। বাদে একদিন গ্যাছে গা। আম্মা বাসা বাড়িতে কাম করতো। আমি সারাদিন রেললাইন, বাজার, আড়ত- এইসব জায়গাত ঘুরতাম। দৌড়ানি ঠ্যাঙ্গানি খাইছি। যখন নিজ গুণে খাইছি, তখন গায়ে লাগে নাই। যখন বেহুদা খাইছি, তখন খুব লাগছে।
রশিদ ভাই আমারে লাইনে তুলছে। সে নিজে নাই হইয়া গ্যাছে। কেমনে নাই হইছে সেইটা নিয়া লোকে আমারে জড়ায়া আকথা কুকথা কইতো। এহনও কয় কেউ কেউ। আমার ভালো হইছে। রাসতা কিলিয়ার হইছে।
রশিদ ভাই কইতো, আজগা ভালা দিনরে! বুঝতাম আজগা টেকা আর বিরানি পাওয়ার দিন।
একবার এক মেয়ের গলাত্তে চেইন লইয়া দৌড় দিছিলাম। সাতশ’ টেহা পাইছিলাম। কয়েকটা দিন মৌজে গেছে। মেয়েডার কথা মনে হইলে খারাপ লাগতো। আহা, অরে কে জানি দিছিল চেইনডা!
আমারে চোট্টা কইতো পরিচিত লোকেরা। ভাল্লাগতো না। খাওয়ানের জন্য যা করতাম- এই জন্য একটা ছোট পোলারে চোট্টা চোট্টা বইলা খেপানো, মাইরধোর করা, আঙুল ভাইঙ্গা দেওয়া, বিড়ির ছ্যাক দেওয়া ঠিক না। ছোট ছিলাম, তারপরেও মনে হইত একদিন তোগোরে দেইক্ষা নিমু।
রশিদ ভাইয়ের লগে চলছি। একদিন একটা ঘটনা ঘটল। পুলিশ আসল। আমি পালাইছিলাম। লোকে আমারে এখনো ভুল বুঝে। মনে করে আমিই করছি কাজডা। আমি জানি ঐটা আমি করিনাই। পরে আর করছি কি না, এইটা বলা যাবে না। আমি বলব না। রশিদ ভাই নাই হইয়া যাওয়ার ঘটনাডা আমারে একটা শিক্ষা দিল। লোকজন আমার নাম জানল। পালায়া থাকলেও মাঝে মাঝে এলাকায় আসতাম। লোকজন তোয়াজ কইরা কথা বলত। আমি দেখলাম, জিনিসটা ত ভালোই! ইতরামি, ফাতরামি নাই; ঠোয়া মারা, গালি গালাজ নাই, উল্টা আদর!মাথায় আসলো, এমন দুই একটা ঘটনা হইলে তো….
টাকা হইতে সময় লাগে না। লাইন লাগে। লাইন পাইছিলাম। টাকা হওনের পর পজিশনও হয়। আমার ভিত্রে যে পজিশন পাওনের খায়েশ ছিল, জানতাম না। টাকা হওয়ার পর জানলাম। এখন ভালো আছি। আগে যারা চোট্টামোট্টা বলত, তারা আসে, মাঝেমধ্যে দেখা করার সুযোগ পায়, কয়, আফনে বাবা আমরার সন্তান, আমরার গর্ব!