ধরুন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া হলো, “এখন থেকে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে তোমরা আর লাঠিচার্জ করবে না, কাঁদানে গ্যাস ছুড়বে না, জল কামান ব্যবহার করবে না, পিপার স্প্রে ব্যবহার করবে না, আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করবে না। তোমরা ভালোবাসা দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করবে। লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস, জল কামান, পিপার স্প্রে- এসবের পরিবর্তে ফুল দিয়ে, চকলেট দিয়ে, শুভেচ্ছা উপহার দিয়ে বোঝাবে, বলবে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে। কেউ আইন নিয়ে তাচ্ছিল্য করলে বা খেললে, বলবে আইন খেলনা নয়। প্লিজ, আমাদের কথা শুনুন! আইনকে ভালোবাসুন, ভালোবেসে শ্রদ্ধা করুন। এসব কথা বলার পরেও যদি কেউ ঠাট্টা -মশকারা করে, তবুও তোমরা হাসি মুখে সবাইকে বোঝাবে। এভাবে করতে থাকলে দেখবে এক সময় পরিবর্তন আসবেই।”
ধরুন এমনটা নির্দেশিত হলো, আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তা পালন করতে শুরু করলো; তাহলে কি হবে?
তাহলে কি হবে সেটা বলতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কি হবে সে নিয়ে কিছু বলবো না; বলবো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কী হবে, অর্থাৎ আমাদের সচেতন ও অপরাধপ্রবণ জনগনের কাছ থেকে তারা যে ব্যবহারটা পাবে সেটা নিয়ে। সে বলাও বিশদ পরিসরে বলবো না, বলবো সংক্ষিপ্ত আকারে।
এমনটা হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অপরাধপ্রবণ ওইসব জনগণের কাছে বড়কুটুম বলে বিবেচিত হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তারা তখন বলবে,
– কিরে তোরা এত ঢিলা ক্যান!
-এগুলা কি বুঝস! আমাগো কি বুঝাইতে চাস!
-কি ফুল দিলি, তাজাও না, গন্ধ নাই। ভালো ফুল দে, ডার্লিংরে দিমু।
-এইটা কী চকলেট দিলি, ক্যান্ডি দে। খোসাটা ছাড়ায়া আমার মুখে দে।
– খালি চকলেটই দিবি? কেক-মেক কবে দিবি? তোরা কবে উন্নত হবি?
– আইনটা আমারে ভালো কইরা বুঝা…. আবার বুঝা… আবার বুঝা….
-কি উপহার দিলি! ভাল কিছু দিতে পারস না? নাকি ভাল জিনিস রাইখা আমাগো লামছাম কিছু ধরায়া দিছস?
-বর্ষাকাল আইছে, ছাতা ধরবি কবে….! কদম ফুল দে! কি কদম দিলি, রোয়া ভাঙা!
…এসবই হতো, হতে থাকত, চলত, চলতে থাকত। এটা আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি। আপনি হয়ত সন্দেহ প্রকাশ করবেন আমার কথায়, ভাববেন আমি কী করে এত নিশ্চিত হচ্ছি। জবাবে আমি শুধু মাথা দোলাবো আর সবজান্তার ভঙ্গীতে বলব, হুহহু..