ওটা মানুষেরই লাশ ছিল- এটুকু অন্তত নিশ্চিত হওয়া গেছে নিরীক্ষা আর কাটাছেঁড়া ছাড়াই। কাটাছেঁড়া ছাড়া আর মানুষ বোঝা যায় কই-
ওটা মানুষেরই লাশ। অবশ্যম্ভাবী হয়ে এলো এই আয়োজন। কোত্থেকে এলো সে, কোথায় বা যাচ্ছিল? এ পথেই কেন এলো? মৃত্যুই ডেকেছিল তারে? হাটে কেউ মরতে আসে!
সে কি বাড়ি ফিরছিলো? কোথায় তার বাড়ি? সে কি বাড়ি হতে ফিরছিলো? কোথায় ফিরছিলো? এখানেই কি আসতে চেয়েছিল? এসেছিল, পেয়েছিল পূর্ণতা, এরপর মরে গেল? অথবা এসেছিলো, পায়নি, মনঃপীড়ার গ্লানি জয়ী হয়ে গেল?
কী পোশাক ছিল তার গায়ে? মাংস খ’সে গেছে। পোশাক কি ছিল আদৌ? ঋতুভেদ মেনে? কৃষ্টি মেনে আর পরম্পরা মেনে? মতবাদ মেনে? কী পোশাক ছিল তার গায়ে? আদৌ কি ছিল? পুরাতন লাশ, ঠাহর করে বলা যায় না।
কোত্থেকে এসেছিলো সে? পূর্ব? পশ্চিম? উত্তর? দক্ষিণ? কোনো কোণ হতে? উধঃ কিংবা অধঃ হতে?
কী ছিল সে? হিন্দু? মুসলিম? বৌদ্ধ? খ্রিস্টান? শিখ? জৈন? প্যাগান? হিপ্পি? ধর্মহীন? কী ছিল সে, এসেছিল হাটে? যদিওবা হাটেই সব সমাগম ঘটে। বলা কি যাবে? বলা কি যায় সুনিশ্চিত করে?
কে ছিল তার সাথে? কেউ কি ছিল? ছিল যদি তবে কি এভাবে মরে পড়ে থাকে মাটির আদলে?
কেউ কি তার খোঁজ করেছে কখনো? হয়ত করেছে। খোঁজের ব্যাপ্তি পেরিয়ে গেছে কবে! কে খোঁজ করেছিলো? পিতা? মাতা? পুত্র? কন্যা? বন্ধু? পরিজন? কে খোঁজ করেছিলো? কোথায়? খোঁজ কি কেউ করেছিলো আদতেই?
ওটা মানুষেরই লাশ। মাটিতে মিশে যাওয়া ঠাহরের লাশ- সে ভূমিকা রাখে না, যবনিকাও না।
০৩/০৫/২০১৯